রাত ১২:১৯ মিনিট
ঘুম আসছিল না,হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠল ...
"হ্যালো,কেমন আছো অরণ্য?"
"বেঁচে থাকার জন্য যতটা ভালো থাকা দরকার ততটা ভালো আছি।"
"এটা কেমন উত্তর?একদিনও তো এমন উত্তর দাওনি?"
( কিছুক্ষন নীরবতা )
কেউ কোন কথা বলছে না।নীরবতা ভেঙে অরণ্য অনেক কষ্টে বলতে লাগল ....
"আমার কথা ছাড়ো।তুমি কেমন আছো?"
নীলিমা : তুমিই তো জানো।
অরণ্য : আমি দোয়া করি তুমি সবসময় খুশি থাকো। আর শোনো,একটুও মন খারাপ করবে না কিন্তু, কেমন?
আর মেহেদীর ডিজাইন ঐ টা করছো তো?যেটা নিয়ে তোমার সাথে আমার ঝগড়া হত।আর তোমার হবু বর নিশ্চয়ই আমার চেয়ে অনেক সুন্দর এবং টাকা পয়সা আছে।
( চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়ছে অরণ্যর )
"অরণ্য তুমি কষ্ট পেয় না।আজকের পর থেকে তো তোমায় আর শাসন করব না।কখনও বেশি রাত জাগবে না,অসুস্থ হলে ঠিকমত ওষুধ খাবে কিন্তু।আর কোনদিন তোমায় মাঝরাতে কল দিয়ে ঘুম ভাঙ্গিয়ে বলব না,''ঘুমিয়ে পরেছ?চাঁদটা দেখ একবার।''
অরণ্য আর সইতে পারছিল না।
তাই বাধ্য হয়ে ফোনটা কেটে দিল ।
তারপর বেশ কয়েকবার ফোনের স্ক্রিনটা আলোকিত হয়েছিল কিছু সময় পর পর ।
অরণ্য ফোনটা রেখে বের হয়ে গেল।কোনো উদ্দেশ্য নেই।কিছুটা সামনে যাওয়ার পর রাস্তার মোড়ে ডাস্টবিনের কাছে কুত্তা ভাইয়ের সাথে দেখা।
অরণ্য : কি খুজতেসেন কুত্তা ভাই?
কুত্তা ভাই : অরণ্য ভাই না?
অরণ্য : হুম।
কুত্তা ভাই : তারপর এতদিন পর দেখা, রাতে তো বাইরে দেখলাম না অনেকদিন।
অরণ্য : হুম, একটু পথভ্রষ্ট হয়ে গেসিলাম।
কুত্তা ভাই : ভবঘুরে মানুষরা যখন ঘরমুখী হয় তখন বুঝে নিতে হয় কারো মায়ায় আবদ্ধ হয়েছে। তো ভাই মায়া কেঁটে গেসে নাকি?
অরণ্য : হয়তো।
কুত্তা ভাই : এই পৃথিবীতে সবার এই মায়া আছে, কেউই মায়া ত্যাগ করতে পারে না। সম্ভবও না। তাইতো হিমু খালি বইয়েই সীমাবদ্ধ। বাস্তবতা বড়ই কঠিন জিনিস।
অরণ্য : দেখি চেষ্টা করে হিমু হতে পারি নাকি। কাউকে না কাউকে তো পাবো যে সব মায়ার বন্ধন ত্যাগ করতে পেরেসে।
কুত্তা ভাই : খুঁজে দেখেন। পৃথিবী বৈচিত্র্যময়। পেলেও পেতে পারেন।
অরণ্য কুত্তা ভাইয়ের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে হাঁটা ধরলো।
পার্কের গেট দিয়ে পার্কে প্রবেশ করলো।চিরচেনা সেই বেঞ্চের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো।
বেঞ্চে বসে পুরোনো স্মৃতিচারণ করতে লাগলো।
পৃথিবী আসলেই বৈচিত্র্যময়। যেখান থেকে গল্পের শুরু হয়েছিলো সেখানেই গল্পের ইতি টানলো অরণ্য।
অবশেষে অরণ্য সকল প্রকার মায়ার বন্ধন ত্যাগ করার পরিকল্পনা করে হিমুর শিষ্য হওয়ার চেষ্টা করার জন্য মনস্থির করলো।
পুনশ্চ : তারপর আর কোনদিন নীলিমার সাথে যোগাযোগ হয়নি অরণ্যের।
No comments:
Post a Comment