১.
সকাল থেকে বইয়ের মধ্যে মুখ গুজে আছে মেয়েটি। দানা পানি বলতে শুধু দুই ঘটি জল আর পাশের বাগানের একখানা পেয়ারা। পরশু পরীক্ষা। তাকে এই বারও সবার আগে থাকতে হবে। কিন্তু তার মা বাপের খুব একটা আগ্রহ নেই। মাইয়া বড় হইছে। এবেলা বিয়া দেওয়া দরকার। পাড়াপরশির মত মেয়ের বাবাও তাই ভাবেন। কিন্তু মেয়ের বড় স্বাদ, বড় হয়ে ডাক্তার হবে। গেলো বছরের মত বিনা চিকিৎসায় মরতে দেবে না তার গাঁয়ের লোকদের।
- মা। তোর নিকা ঠিক হইছে। এহন আর অত পইরা কাম নাই।
- জ্বী আচ্ছা।
জ্বী আচ্ছার সাথে দু ফোটা নোনা জল গরিয়ে পরে গালে। বাপ কি তা দেখে না? দেখে ।কিন্তু কিচ্ছু করার নেই। অভাবের সংসার, ভিটে নাই, মাটি নাই, খাবার নাই, অস্তিত্বও নাই। মেয়েরে বিয়ে দিলে অন্তত একটা পেট কমে।
কন্যার মা এসে খুব কাছে বসে তাকে বলে,
- কান্দিস না। পরশু বিয়া। আমাগোর আজকাই ওপারে চইলা যাইতে হইবো।
মেয়ের মনে এক প্রশ্ন, আমার পরীক্ষা? কিন্তু তা আর সাহস করে বের হয় না মুখ দিয়ে।
২.
বাবা আজকে ব্রেকফার্স্ট জঘন্য হয়েছে। আজ থেকেই বাবুর্চি বাদ দিবা। আর আরেকটা কথা শুনো, কালকে আমার এক বন্ধুর জন্মদিন। হাজার পাঁচেক টাকা দিয়ো। আর পাশের বাসার লোকজন আমার দিকে কিভাবে যে তাকায়। উফফ!! আমি কি পরি না পরি তাতে তাদের কি? বলতো বাবা।
একানাগারেই বলে যায় কন্যা।
- চিন্তা করছি তোকে একটা নোবেল প্রাইজ দেব। কি বলিস?
- নোবেল কি তুমি দিবা?
- না তো। নোবেল কমিটি দেবে।
- তারা কি আমাকে এমনি এমনিই দেবে?
- না। তা কেন হবে?
- তবে?
- নোবেল পাওয়া খুব একটা কঠিন কিছু না। উপর মহল কে খুশি করলেই হল। তবে তোকে একটু কষ্ট করতে হবে।
- নোবেল যদি সত্যিই পাওয়া যায় তবে আর কি লাগে। করলাম না হয় কষ্ট।
কন্যার কানে কানে প্লান বাতলে দেয় পিতা মহদয়।
সকাল থেকে বইয়ের মধ্যে মুখ গুজে আছে মেয়েটি। দানা পানি বলতে শুধু দুই ঘটি জল আর পাশের বাগানের একখানা পেয়ারা। পরশু পরীক্ষা। তাকে এই বারও সবার আগে থাকতে হবে। কিন্তু তার মা বাপের খুব একটা আগ্রহ নেই। মাইয়া বড় হইছে। এবেলা বিয়া দেওয়া দরকার। পাড়াপরশির মত মেয়ের বাবাও তাই ভাবেন। কিন্তু মেয়ের বড় স্বাদ, বড় হয়ে ডাক্তার হবে। গেলো বছরের মত বিনা চিকিৎসায় মরতে দেবে না তার গাঁয়ের লোকদের।
- মা। তোর নিকা ঠিক হইছে। এহন আর অত পইরা কাম নাই।
- জ্বী আচ্ছা।
জ্বী আচ্ছার সাথে দু ফোটা নোনা জল গরিয়ে পরে গালে। বাপ কি তা দেখে না? দেখে ।কিন্তু কিচ্ছু করার নেই। অভাবের সংসার, ভিটে নাই, মাটি নাই, খাবার নাই, অস্তিত্বও নাই। মেয়েরে বিয়ে দিলে অন্তত একটা পেট কমে।
কন্যার মা এসে খুব কাছে বসে তাকে বলে,
- কান্দিস না। পরশু বিয়া। আমাগোর আজকাই ওপারে চইলা যাইতে হইবো।
মেয়ের মনে এক প্রশ্ন, আমার পরীক্ষা? কিন্তু তা আর সাহস করে বের হয় না মুখ দিয়ে।
২.
বাবা আজকে ব্রেকফার্স্ট জঘন্য হয়েছে। আজ থেকেই বাবুর্চি বাদ দিবা। আর আরেকটা কথা শুনো, কালকে আমার এক বন্ধুর জন্মদিন। হাজার পাঁচেক টাকা দিয়ো। আর পাশের বাসার লোকজন আমার দিকে কিভাবে যে তাকায়। উফফ!! আমি কি পরি না পরি তাতে তাদের কি? বলতো বাবা।
একানাগারেই বলে যায় কন্যা।
- চিন্তা করছি তোকে একটা নোবেল প্রাইজ দেব। কি বলিস?
- নোবেল কি তুমি দিবা?
- না তো। নোবেল কমিটি দেবে।
- তারা কি আমাকে এমনি এমনিই দেবে?
- না। তা কেন হবে?
- তবে?
- নোবেল পাওয়া খুব একটা কঠিন কিছু না। উপর মহল কে খুশি করলেই হল। তবে তোকে একটু কষ্ট করতে হবে।
- নোবেল যদি সত্যিই পাওয়া যায় তবে আর কি লাগে। করলাম না হয় কষ্ট।
কন্যার কানে কানে প্লান বাতলে দেয় পিতা মহদয়।
৩.
নোবেল কমিটি খুবই চিন্তিত। শান্তিতে কাকে নোবেল দেওয়া যায়?
নোবেল কমিটি খুবই চিন্তিত। শান্তিতে কাকে নোবেল দেওয়া যায়?
এমন কাউকে দিবেন যে ধর্মপন্থিদের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করেছে। আবার নারী হতে হবে কিন্তু। তালেবানদের হাতে হেনস্ত হয়া কেও আছে?
ক্রিং ক্রিং...
- হ্যালো।
- হ্যালো, এটা কি নরওয়েজীয় নোবেল সমিতি?
- জ্বী… কে বলছেন?
- আমি যিয়াউদ্দিন ইউসুফযাই।
১. এর প্রেক্ষিতে,
ক্রিং ক্রিং...
- হ্যালো।
- হ্যালো, এটা কি নরওয়েজীয় নোবেল সমিতি?
- জ্বী… কে বলছেন?
- আমি যিয়াউদ্দিন ইউসুফযাই।
১. এর প্রেক্ষিতে,
বর্ডার ক্রস করে বিয়ের পিড়িতে বসতে যাচ্ছিলো ফেলানী খাতুন। কাটাতার পাড় করার সময় ভারতীয় সিমান্ত রক্ষীর হাতে নির্মম ভাবে হত্যা হয় ১৫ বছর বয়সী দরিদ্র ফেলানী। তার না হল বিয়ের পর স্বামীর সংসার না হল ডাক্তার হয়ে নিজ গ্রামের সেবা করা।
দরিদ্র দেশের দরিদ্র কন্যা হচ্ছে পাখির মত। মরলেই কি বাচলেই বা কি? মরেই ভাল একটা পেট কমলো।
অবশ্যি কিছু মানবধিকার সংস্থা এর তীব্র প্রতিবাদ জানায় এবং সুষ্ঠু বিচার দাবি করে।
২. এর প্রেক্ষিতে,
দরিদ্র দেশের দরিদ্র কন্যা হচ্ছে পাখির মত। মরলেই কি বাচলেই বা কি? মরেই ভাল একটা পেট কমলো।
অবশ্যি কিছু মানবধিকার সংস্থা এর তীব্র প্রতিবাদ জানায় এবং সুষ্ঠু বিচার দাবি করে।
২. এর প্রেক্ষিতে,
২০১৪ সাল। নোবেল প্রাইজ অনুষ্ঠানে শান্তিতে নোবেল দেওয়া হয় দুই জন কে। বলা হয়,
[পরিশিষ্টঃ আমাদের দেশের মেয়েরা কি কম যায়? আমাদের প্রধানমন্ত্রী যে দেশের সন্তানদের বস্তা বস্তা গোল্ডেন এ+ দেয় প্রতি বছর অথবা মাওয়াঘাটের মেয়েটা যে নিজের খেয়ে নিজের পরে গ্রামের পিচ্চিদের পড়ায় তাদের কি কোনো যোগ্যতা নাই? আমি বুঝি না কেন তারা কোন দিক থেকে মালালা ইউসুফযাই এর চেয়ে কম?
কারন কি এই যে তারা কেউই “তালেবানদের হাতে গুলি খাওয়া” শীর্ষক নাটিকার অংশ নয়? নোবেল দেয়ার কিছু নিয়ম আছে। এই নিয়ম মানতে হলে মালালা ম্যাডামের আগে বাংলার অনেক ছেলেমেয়েকে নোবেল দিতে হয়। কিন্তু আফসোস, এদেশে কোনো তালেবান নাই।
শান্তিতে নোবেল দেয়ার নিয়মঃ
নরওয়েজীয় নোবেল সমিতি কর্তৃক নির্ধারিত। "যিনি জাতিসমূহের বন্ধুত্ব রক্ষা এবং বৃদ্ধি, যুদ্ধের জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত সেনাবাহিনীর অপসারণ বা হ্রাস এবং শান্তি প্রক্রিয়া ত্বরান্বিতকরণে সবচেয়ে বেশী ভূমিকা রাখবেন তাকে এই পুরস্কার দেয়া "
আশা করি পৃথিবীতে একদিন ন্যায়নিষ্ঠতা ফিরে আসবে। ]
“The Nobel Peace Prize 2014 was awarded jointly to Kailash Satyarthi and Malala Yousafzai "for their struggle against the suppression of children and young people and for the right of all children to education" ”
[পরিশিষ্টঃ আমাদের দেশের মেয়েরা কি কম যায়? আমাদের প্রধানমন্ত্রী যে দেশের সন্তানদের বস্তা বস্তা গোল্ডেন এ+ দেয় প্রতি বছর অথবা মাওয়াঘাটের মেয়েটা যে নিজের খেয়ে নিজের পরে গ্রামের পিচ্চিদের পড়ায় তাদের কি কোনো যোগ্যতা নাই? আমি বুঝি না কেন তারা কোন দিক থেকে মালালা ইউসুফযাই এর চেয়ে কম?
কারন কি এই যে তারা কেউই “তালেবানদের হাতে গুলি খাওয়া” শীর্ষক নাটিকার অংশ নয়? নোবেল দেয়ার কিছু নিয়ম আছে। এই নিয়ম মানতে হলে মালালা ম্যাডামের আগে বাংলার অনেক ছেলেমেয়েকে নোবেল দিতে হয়। কিন্তু আফসোস, এদেশে কোনো তালেবান নাই।
শান্তিতে নোবেল দেয়ার নিয়মঃ
নরওয়েজীয় নোবেল সমিতি কর্তৃক নির্ধারিত। "যিনি জাতিসমূহের বন্ধুত্ব রক্ষা এবং বৃদ্ধি, যুদ্ধের জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত সেনাবাহিনীর অপসারণ বা হ্রাস এবং শান্তি প্রক্রিয়া ত্বরান্বিতকরণে সবচেয়ে বেশী ভূমিকা রাখবেন তাকে এই পুরস্কার দেয়া "
আশা করি পৃথিবীতে একদিন ন্যায়নিষ্ঠতা ফিরে আসবে। ]
No comments:
Post a Comment