স্কুল জীবনের প্রথম ৮ বছর একা কেটেছে। লাস্ট বেঞ্চে বসতাম। পাশে বসার আগ্রহ কেউ দেখাত না। জানালার পাশে বসে ছবি আকতাম। সে ছবির নায়িকার দৃশ্যে সবসময় একটা মেয়ে থাকত। কল্পবিলাসী ছিলাম। একদিন একটা মেয়ে পাশে এসে বসলো। কোনো কথা না বলেই সেই ছবির খাতাটা নিয়ে দেখতে থাকলো। চুপ করে রইলাম। ঘড়ি ধরা ১৭ মিনিট ২৫ সেকেন্ড পর নীরবতা ভাঙ্গলো।
- "তুমি একেছ....?"
- "হুম.."
- "সুন্দর, আমাকে শিখাবা....?"
- "না"
- "কেন?"
- "এমনি"
- "হুম.."
- "সুন্দর, আমাকে শিখাবা....?"
- "না"
- "কেন?"
- "এমনি"
আবার দুইজনে চুপ। ঘড়িতে তখন ১০:২৫ বাজে। ইয়া মোটা একজন লোক ক্লাসে ঢুকলো। তাকে আমার ভাল লাগত না। খুব বেশি কথা বলত ক্লাসে। সবাই তাকে পছন্দ করত খুব। আমি করতাম না। অংক মাথায় ঢুকত না বলেই হয়তবা। তার চেয়ে খারাপ লাগত সমাজ ক্লাস, রোগা পাতলা একজন ম্যাডামকে আমার পৃথিবীর সব চেয়ে খারাপ মানুষ মনে হতো। তাকে দেখলেই একটা গ্যাস বেলুন কিনতে ইচ্ছে করত। আমার মনে হতো এক টাকা দামের বেলুনে গ্যাস ভরে তাকে সেই বেলুনে বেধে দিলেই কাজ শেষ। তার ক্লাস থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। কি সাংঘাতিক আনন্দ থেকে বঞ্চিত ছিলাম।
পাশে বসা মেয়েটি বলল "আমারও একই ইচ্ছা, গ্যাস বেলুনে ভরে তাকে উড়িয়ে দেয়া।" কথাটা বলেই হাসতে লাগলো হি হি হি করে। কি সাংঘাতিক, মেয়েটা আমার মনের চিন্তাটা বুঝলো কি করে !!! তাকিয়ে রইলাম তার দিকে। মেয়েটার নাম হৃদি।
No comments:
Post a Comment