পুনর্মিলন (তোরা পর্ব - ১) - জাহিদ আহসান ইয়াসিন

সকাল ১১ টা বেজে ৯ মিনিট। এখন আমি ১১ তলায় যাচ্ছি কিছু পুরানো স্মৃতিকে একটু তাজা করতে।লিফট দিয়ে ১১ তলায় উঠে বাসার দরজার সামনে এসে দাঁড়ালাম।ঠক ঠক করে দরজার কড়া নাড়লাম।দরজা খুলতে একটু সময় লাগলো।দরজা খুলেই অল্প সময়ের মধ্যেই আমার মুখে পড়লো এক ঘুষি।আমি ও কম নই। ঘুষি খেয়ে কিছুটা ছিটকে পরে ও তাল সামলিয়ে আমি ও শুরু করে দিলাম পাল্টা ঘুষি দিয়ে, ধাক্কা দিয়ে ঘরের ভিতরে ঢুকে বসার ঘরে মারপিট করতে করতে বসার ঘর ধ্বংস করে দিলাম। দুঃখ হলে ও সত্য যে মার খেয়ে আমিই অভাগা অজ্ঞান হয়ে গেলাম।
পরিস্থিতি এখন গরম, সেই অনুযায়ী পরিবেশ মোটে ও গরম নয়। পরিবেশ এখন বেশ ঠান্ডা, সূর্যের হালকা কোমল রোদ আছে বিদ্যুৎবিহীন ঘরে। বাসায় বিদ্যুৎ আছে, কিন্তু বিদ্যুৎ বিভ্রাট তো আমাদের দেশের নিয়মিত একটি ঘটনা।বসার ঘরে উপস্থিত সবারই ঠান্ডা লাগছে বুঝা যাচ্ছে কিন্তু আমার শরীর গরম।চোখ খুলতেই দেখি ১০ টি অতি পরিচিত মুখ আমার দিকে তাকিয়ে। একজন আমার পাশে আমার সেবায় ব্যস্ত।আমার হাতে কাঁচ বিঁধে আছে, এক চোখ কালো , আরো নানা জায়গায় অনেক ছোট খাট আঘাত।শরীরের অনেক জায়গায় ব্যথা তার পর ও বললাম,
"এত দিন পরে দেখা আর এই গ্রিটিংস!!!"
আমার এই অবস্থা যে হবে তা আমি জানতাম কারণ আমার চেয়ে ওর শক্তি,বুদ্ধি,স্বাস্থ্য সবই বেশি তারপর ও আমার তার বাসায় আসা কারণ আজকের পর থেকে যা করবো তা একা করা সম্ভব না। আর আমরা যা তৈরী করেছিলাম তা যে কত বড় একটা এচিভমেন্ট ছিল তা আমি পুরোটাই মাটি করে দেই। আমায় সেবায় ব্যস্ত মেয়েটি জোরে চড় মেরে বসলো।বলে উঠলো,
"আমাকে তুমি কি ভাব! যখন খুশি যা খুশি তাই করো তাই না!"
"আমি জানি আমি গুনাহ করে ফেলসি তারপর ও একটু খুশি দেখাও।" আমি বললাম।
"তুই তো একটা টুট! তোরে যে এখনো আমরা আস্ত রাকসি এইটাই বেশি।" ও পাশ থেকে বাউল বলে উঠল।
"তোরা ওর কথা শুনস কেন?ও তো একনম্বরের মিথ্যুক।" স্যাম বলল।
"আমাগোরে জীবনে কি ভাই-ব্রাদার ভাবসিলি?" চিকা বলে উঠল।
"বলার কি আছে এইখানে! আগে মাইরা শান্তি পাইয়া লই, পরে দেখতেসি ব্যাপারটা।" ডোরে বলল।
গাল ধরে আবার কিছুক্ষণ অন্ধকার দেখার পর আবার মার শুরু।মনে মনে ভাবলাম, "এখন আর বাঁচার উপায় নাই।"
তবে আশার আলো যে আগে যারা আমাকে মেরেছিলো সবাই বলে উঠলো,
"থাক।পোলার অবস্থা ভালো হোক তারপর স্বাদ মিটাইস"।
"এই প্রতিবন্ধীর তো এখনো শিক্ষা হয় নাই। দেখ না কেমনে চাইয়া রইসে"। নাপা বলল।
এরপর শুরু করল সামনে বসে থাকা অরণ্য। আমার দিকে তাকিয়ে বললো,
"কি বললি যেন!? এত দিন পরে দেখা আর এই গ্রিটিংস!!! আমাগোর প্রজেক্ট নিয়ে উধাও হইয়া যাও মাঝ পথে। ৩ মাস কোনো খোঁজ খবর নাই, নিজের পরিবারেরর কোনো খবর রাখো না, তোর মা-বাপ আমাগোরে আইসা ধরে যে ও কই গেসে??? আর এখন আকাশ থেইকা পইড়া কও যে এমন গ্রিটিংস!!!"
"দেখ ভাইগুলা আমার। তোদের সব প্রশ্নের উত্তর দিবো আগে আমার পুরা কথা শুন।" কিছুক্ষন নিশ্চুপ থেকে বলে উঠলাম।
সবাই সবার মধ্যে কিছুক্ষণ আলোচনা করল।অতঃপর সবাই একত্রে বলল,
"বল শুনি। কি আর আছে জীবনে?"

জীবনমাল্য

লেখক ... .

No comments:

Post a Comment