"এই ছেলে! এই!"
নীল এতটাই মনযোগ দিয়ে চাঁদ দেখছিল যে কখন যে তার পিছনে দুইজন টহলদার পুলিশ হাজির হয়েছে তা সে টেরই পায় নি।এতো মহাবিপদ।কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের কাছে চোর-ডাকাতের থেকে পুলিশ বেশি বিপদজনক।কথা নেই, বার্তা নেই, স্রেফ টাকা খাওয়ার জন্য শুধু অপরাধীই নয়, নীরোপরাধ মানুষকে ও ধরে।কখনো বড় দান পেলে থানায় ধরে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা ও চালায়। অবশ্য সৎ পুলিশ অফিসার যে এ দেশে নেই তা কিন্তু সত্য নয়।কিন্তু সৎ পুলিশ অফিসার খোঁজার চেয়ে বরং দিনের বেলায় অমাবস্যার চাঁদ খুঁজে বের করার চেষ্টা নেওয়া ভালো।
"এই ছেলে! ডাকছি না তোকে? কানে শুনতে পাস না?" একজন পুলিশ ধমকে উঠলো।
নীল ধমক শুনে নিজের চিন্তার জগৎ থেকে বেরিয়ে এল। কি আরাম করে চাঁদ দেখছিল, পুলিশ এসে বাগড়া দেওয়ায় নীল বিরক্ত।
"আমাকে বলছেন?" নীল উঠে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞাসা করল।
"তোর কি মনে হয় এই গভীর রাতে তুই বাদে আশেপাশে কে আছে যে তারে জিগামু?" অপর পুলিশ চেঁচিয়ে উঠল।
"ও আচ্ছা।"
"নাম কি তোর?"
"আমার নাম নীল।"
"আইচ্ছা? করিস কি? থাকিস কোথায়?"
"কিছু করি না। থাকার ও কোন নির্দিষ্ট কোন জায়গা নেই।"
পুলিশদ্বয় থমকে গেল। তাদের চোখে নীলের বাহ্য চেহারা দেখে মনে হয় নি যে নীল ভবঘুরে শ্রেণীর লোক। মনে হয়েছে ছেলে বড়লাট। যদি ও নীল ভবঘুরে নয়, তবু তাদের কাছাকাছি শ্রেণীরই তো।
"দেইখ্যা তো মিসকিন মনে হইতাসে না। পোলাডা মনে হয় টাল। তাই উলডা-পালডা বকতাসে।" একজন পুলিশ আরেকজন পুলিশের কানে কানে বলল।
"রাখ তো! ডান্ডা দিয়া রামডলা দিলেই হড়হড় কইরা কথা কইব।" অপর পুলিশ বলল।
"কিরে কি খেয়েছিস যে এত আমোদ করে চাঁদ দেখছিস? দেখি তো তোর পকেটে কি?" প্রথম পুলিশটি এবার নীলের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস বলল।
"চেক করবেন নাকি?"
"হুম।" অপর জন নীলের দিকে এগিয়ে আসতে আসতে বলল।
"যদি কিছু না পান?"
"তাহলে ছেড়ে দিব।"
" যদি কিছু পান?"
"তাহলে হাজতে চালান করব।"
একথা বলে প্রথম পুলিশটি অপর পুলিশকে ইশারা করল নীলকে চেক করার জন্য।
নীল বিরক্ত মুখে তল্লাশি শেষ হবার অপেক্ষা করতে লাগল। সে জানে যে তার পকেটে সন্দেহজনক কোন জিনিস তো দূরে থাক, দুইটা টাকা ও নেই। তবু পুলিশের উপর ভরসা নেই, কেউ-কেউ আবার নির্দোষ মানুষের পকেটে ও উল্টা-পাল্টা জিনিস ভরে দিয়ে আবার সেটাই বের করে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে ধরে। তাই নীল তীক্ষ্ণ চোখে চেক করতে থাকা পলিশটির দিকে তাকিয়ে রইল।
সাথে ছোট একটি দীর্ঘশ্বাস ফেলল। নশ্বর এই পৃথিবীতে মানুষ যতই শান্তিতে থাকতে চাক না কেন,বাকি মানুষেরা তাকে শান্তিতে থাকতে দিবে না। শান্তি এখন স্বপ্ন ছাড়া কিছুই না, সে যেন হারিয়ে গেছে কোন এক অজানা হারানো অরণ্যে, যেখান থেকে কেউ তাকে উদ্ধার করতে পারছে না, সে নিজে ও ফিরে আসতে পারছে না। চিন্তা করতে করতে নীল নিজেই আবার চিন্তার জগতে হারিয়ে গেল। তল্লাশি তখনো চলছে, সামনের, পিছনের, ডানের, বামের সব পকেটে অনুসদ্ধান চলছে। শার্টের পকেট ও বাদ দিবে বলে মনে হচ্ছে না।
#পূর্ণিমার_চাঁদ
#শান্তি_লাভের_ব্যর্থ_চেষ্টা
#পুলিশের_খপ্পরে
#প্রথম_প্রহর_২
#হঠাৎ_তোমার_জন্য [[অয়ন আল মামুন]]
নীল এতটাই মনযোগ দিয়ে চাঁদ দেখছিল যে কখন যে তার পিছনে দুইজন টহলদার পুলিশ হাজির হয়েছে তা সে টেরই পায় নি।এতো মহাবিপদ।কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের কাছে চোর-ডাকাতের থেকে পুলিশ বেশি বিপদজনক।কথা নেই, বার্তা নেই, স্রেফ টাকা খাওয়ার জন্য শুধু অপরাধীই নয়, নীরোপরাধ মানুষকে ও ধরে।কখনো বড় দান পেলে থানায় ধরে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা ও চালায়। অবশ্য সৎ পুলিশ অফিসার যে এ দেশে নেই তা কিন্তু সত্য নয়।কিন্তু সৎ পুলিশ অফিসার খোঁজার চেয়ে বরং দিনের বেলায় অমাবস্যার চাঁদ খুঁজে বের করার চেষ্টা নেওয়া ভালো।
"এই ছেলে! ডাকছি না তোকে? কানে শুনতে পাস না?" একজন পুলিশ ধমকে উঠলো।
নীল ধমক শুনে নিজের চিন্তার জগৎ থেকে বেরিয়ে এল। কি আরাম করে চাঁদ দেখছিল, পুলিশ এসে বাগড়া দেওয়ায় নীল বিরক্ত।
"আমাকে বলছেন?" নীল উঠে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞাসা করল।
"তোর কি মনে হয় এই গভীর রাতে তুই বাদে আশেপাশে কে আছে যে তারে জিগামু?" অপর পুলিশ চেঁচিয়ে উঠল।
"ও আচ্ছা।"
"নাম কি তোর?"
"আমার নাম নীল।"
"আইচ্ছা? করিস কি? থাকিস কোথায়?"
"কিছু করি না। থাকার ও কোন নির্দিষ্ট কোন জায়গা নেই।"
পুলিশদ্বয় থমকে গেল। তাদের চোখে নীলের বাহ্য চেহারা দেখে মনে হয় নি যে নীল ভবঘুরে শ্রেণীর লোক। মনে হয়েছে ছেলে বড়লাট। যদি ও নীল ভবঘুরে নয়, তবু তাদের কাছাকাছি শ্রেণীরই তো।
"দেইখ্যা তো মিসকিন মনে হইতাসে না। পোলাডা মনে হয় টাল। তাই উলডা-পালডা বকতাসে।" একজন পুলিশ আরেকজন পুলিশের কানে কানে বলল।
"রাখ তো! ডান্ডা দিয়া রামডলা দিলেই হড়হড় কইরা কথা কইব।" অপর পুলিশ বলল।
"কিরে কি খেয়েছিস যে এত আমোদ করে চাঁদ দেখছিস? দেখি তো তোর পকেটে কি?" প্রথম পুলিশটি এবার নীলের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস বলল।
"চেক করবেন নাকি?"
"হুম।" অপর জন নীলের দিকে এগিয়ে আসতে আসতে বলল।
"যদি কিছু না পান?"
"তাহলে ছেড়ে দিব।"
" যদি কিছু পান?"
"তাহলে হাজতে চালান করব।"
একথা বলে প্রথম পুলিশটি অপর পুলিশকে ইশারা করল নীলকে চেক করার জন্য।
নীল বিরক্ত মুখে তল্লাশি শেষ হবার অপেক্ষা করতে লাগল। সে জানে যে তার পকেটে সন্দেহজনক কোন জিনিস তো দূরে থাক, দুইটা টাকা ও নেই। তবু পুলিশের উপর ভরসা নেই, কেউ-কেউ আবার নির্দোষ মানুষের পকেটে ও উল্টা-পাল্টা জিনিস ভরে দিয়ে আবার সেটাই বের করে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে ধরে। তাই নীল তীক্ষ্ণ চোখে চেক করতে থাকা পলিশটির দিকে তাকিয়ে রইল।
সাথে ছোট একটি দীর্ঘশ্বাস ফেলল। নশ্বর এই পৃথিবীতে মানুষ যতই শান্তিতে থাকতে চাক না কেন,বাকি মানুষেরা তাকে শান্তিতে থাকতে দিবে না। শান্তি এখন স্বপ্ন ছাড়া কিছুই না, সে যেন হারিয়ে গেছে কোন এক অজানা হারানো অরণ্যে, যেখান থেকে কেউ তাকে উদ্ধার করতে পারছে না, সে নিজে ও ফিরে আসতে পারছে না। চিন্তা করতে করতে নীল নিজেই আবার চিন্তার জগতে হারিয়ে গেল। তল্লাশি তখনো চলছে, সামনের, পিছনের, ডানের, বামের সব পকেটে অনুসদ্ধান চলছে। শার্টের পকেট ও বাদ দিবে বলে মনে হচ্ছে না।
#পূর্ণিমার_চাঁদ
#শান্তি_লাভের_ব্যর্থ_চেষ্টা
#পুলিশের_খপ্পরে
#প্রথম_প্রহর_২
#হঠাৎ_তোমার_জন্য [[অয়ন আল মামুন]]
No comments:
Post a Comment