অবশেষে অরণ্য (পর্ব ৭)

"এই কই তুমি? কতক্ষণ ধরে কল দিচ্ছি? রিসিভ কর না কেন?"
"জাহান্নমের দিকে যাইতেছি। কেন? তুমি যাবে নাকি?"
"আমি আছি আমার চিন্তায় আর তুমি মজা করতেস?"
"কেন? কি হল আবার তোমার?"
"আমাকে কালকে দেখতে আসবে পাত্রপক্ষ, এখন কি করব?"
"কি করবা মানে? কি করবা আবার? বউ সাজবা,স্বামীর বাড়ি যাবা। আর কি?"
"আমি চলে গেলে একা থাকতে পারবে? একটুও কষ্ট হবে না তোমার?"
"না। তুমি চলে গেলে আমার কিসের জন্য কষ্ট হবে? তুমি চলে গেলেই তো আমি  বাঁচি। সকালে যতক্ষণ ইচ্ছা ততক্ষণ ঘুমাবো,ইচ্ছা মতো ঘুরবো,মেয়েদের দেখে ক্রাস খাবো। আর গার্লেফ্রন্ডের বাবার কাছ থেকে রকেট যৌতুক নিয়ে মঙ্গল গ্রহে বউ নিয়ে হানিমুনে যাব।আর তোমার প্লান কি বল? বিয়ের পর স্বামীকে নিয়ে কোথায় যাওয়ার প্ল্যান করসো? আমাকে জানিয়ো কিন্তু।আমিও একবার যেয়ে দেখে আসব।"
"তোমার কথা শেষ হইছে?"
"হুম,আপাতত শেষ হইছে।"
"তুমি থাক তোমার মঙ্গল গ্রহ নিয়ে।"

লাইনটা কেটে গেল...

ও এদের সম্পর্কে তো কিছুই বলা হল না ।
এরা হচ্ছে একজন অরণ্য আর একজন নীলিমা।
নীলিমা অনেক বড় ফ্যামিলির মেয়ে, অপর দিকে অরণ্য ভবঘুরে। কাজের কোনো ঠিক নাই। রুজিরোজগার নাই। আবার নীলিমা অরণ্যকে অনেক অনেক ভালবাসে কিন্তু তার পরিবারের বড়দের ভয়ে সে বাবা মার কাছে অরণ্যর সম্পর্কে কিছুই বলতে পারেনি। তাই এখন না পারছে হাসি মুখে বিয়ে করে নিতে,আর না পারছে তার পরিবারের কাছে অরণ্যর কথা বলতে।
অন্যদিকে অরণ্যর মাথা এতক্ষণে পুরোপুরি নষ্ট। কেন না সে ও নীলিমাকে অনেক ভালবাসে ফেলেছে।
কিন্তু কিছুই করার নেই,এখন যদি অরণ্য তার ভালবাসা পেতে চায় তাহলে নীলিমার পরিবারের কাছে তার যেতে হবে। কিন্তু নীলিমার পরিবারের লোকেরা এটা কোনভাবেই মেনে নিবে না বরং নীলিমাকে একপ্রকার জোর করে এবং যত দ্রুত সম্ভব বিয়ে দিয়ে দিবে। তাই অরণ্য তার ভালবাসাকে হাসি মুখে দেখার জন্য কিছুই করল না।
শুধু নীলিমাকে একটা মেসেজ দিল।

"ভাল থেকো, আমার জন্য চিন্তা করতে হবে না। একভাবে না একভাবে জীবন চলে যাবে, হয়তো তোমার মতো কেউ সকালে কল করে বকবে না, কেন এতক্ষণ ঘুমাচ্ছি? এখনও কেন খাইনি? কেন এখন বাসায় ফিরি নাই? ঐ মেয়েটির দিকে কেন তাকাইছিলাম? মনে হয় তোমাকে খুব মিস করব।"

মেসেজটা পড়ে নীলিমা অঝোরে কাঁদতে লাগল।
আর সিদ্ধান্ত নিল যেভাবেই হোক বিয়ে আটকাতে হবে.....

(চলবে... ) 

পূর্ববর্তী পোস্টঃ অবশেষে অরণ্য (পর্ব ৬)
পরবর্তী পোস্টঃ আসছে ...


Unknown

লেখক ... .

No comments:

Post a Comment