Facebook -- কল্প

রঙিন এক জগতের নেশায় পরে পেছনে ফেলে এসেছি কালো একটা জগত। যখন সন্ধ্যার পরপরই কারেন্ট চলে যেত আর একদল বাদুড়-ছানার মত "টিলোস-পিলোস" নামক মজার লুকোচুরি খেলায় মেতে উঠতাম, হাতের আঙ্গুলে ফিতা বেধে এক-পা'ওয়ালা ঘূর্ণি লাটুম ঘুরাতাম, ইয়ো-ইয়ো নামক মজার স্পিনিং খেলনা হাতের মুঠোয় রেখে শত্রুপক্ষের মুখে ছুড়ে মারতাম, শটপিচ ম্যাচে শেন-ওয়ার্নের মত লেগ স্পিনে ব্যাটসম্যানকে বোকা বানাতাম, ছাদে উঠে ছোট্ট ইটের দলাটা নিচে দাড়িয়ে থাকা কোনো টাক্কু মশাই কে মারতাম, বারান্দায় দাড়িয়ে (বি:দ্র: ৮ বছর বয়সে) পলিথিনে পেশাব করে লক্ষ্যভ্রষ্ঠ ভাবে ছুড়ে মারতাম নিচে চিল্লা-চিল্লি করা বন্ধুদের মজলিশে, বিকেল বেলায় লাটাই হাতে রঙিন সুতোয় বাধা ঘুড়ির প্যাচে মেতে উঠতাম, দস্যি ছেলের মত পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে বেড়াতাম, শীত আসলেই সোয়েটার গায়ে ব্যাডমিন্টন খেলা, বৃষ্টির দিনের ফুটবল...আরো কত কি !!!
বাসায় বসে কাজিনদের সাথে লুডু, ক্যারাম, মনোপলি, এমনকি দাবা ও খেলতাম। এখন এইসব খেলতে বসি না। পড়া হয় না কমিক্স গুলো, কিশোর পাশার গোয়েন্দা কাহিনী গুলো। প্রিয় রঙের তুলি আর ক্যানভাসে আকা সেই ছবিঘরে এখন শুধুই সিগারেটের ধোয়া'র গন্ধ।
মুগ্ধ হতাম সাঝ সকালে রক্তাক্ত চড়ুইয়ের কলিজা চিরে যখন কাক তার খুদা মিটাচ্ছিল। মুগ্ধ হতাম লাল গোলাপের গন্ধে। বিলীন হয়ে গেছে সেই গন্ধ। এখন ক্যাকটাসের কাটা বিধলেই যেন মন আনন্দে নেচে উঠে।
মন পড়ে থাকে একটা ভার্চুয়াল নীল-সাদা খামের ভেতর। যেখানে বন্ধু হবার জন্য কারণ দর্শাইতে হয়, প্রতি মুহুর্তের ঘটনা গুলোকে একটা চিঠি আকারে খামের ভেতর পুরে দেয়া হয় আর খানিক বাদই কয়েকজনের পছন্দ অপছন্দ গুলো সাইন আকারে মুদ্রিত হয়। যেখানে "সেলফি" নামের ফটোশপে সবার ব্যস্ততা আর বাড়াবাড়ি লক্ষ্য করা যায়। বিচিত্র এক সাদা-নীল খামের জগত। রঙিন এক জগত।

[[কল্প]]

জীবনমাল্য

লেখক ... .

No comments:

Post a Comment